রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও ইউএনএইচসিআরের যৌথ প্রচেষ্টা: ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি
- By Jamini Roy --
- 22 January, 2025
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ অঙ্গীকার করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। ড. ইউনূস সংকট নিরসনে একটি বৈশ্বিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দেন এবং এ বিষয়ে ইউএনএইচসিআরের সমর্থন চান। তিনি বলেন, "এ বিষয়ে আপনার সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।" জবাবে গ্র্যান্ডি বলেন, "আমরা আপনাকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।"
বাংলাদেশ বর্তমানে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিধনযজ্ঞের মুখে পালিয়ে আসে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা। সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘর্ষের জেরে আরও এক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।
ড. ইউনূস বৈঠকে বলেন, "এত বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গার আগমন বাংলাদেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে।" তিনি আরও বলেন, "পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। তারা আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে।" রোহিঙ্গা সংকটের ওপর আন্তর্জাতিক মনোযোগ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর উন্নয়নে ব্যবহৃত নতুন উপকরণ অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পূর্বে বাঁশ ও ত্রিপলের ঘর নির্মাণে সীমাবদ্ধতা ছিল, যা এখন অনেকটাই উন্নত। এছাড়াও বৈঠকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মানবিক পরিস্থিতি এবং আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
এর আগে, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য মিয়ানমারের রাখাইনে সেফ জোন তৈরির প্রস্তাব দেন। তিনি জার্মান সরকারের সমর্থন চান।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা আরও কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সঙ্গে তিনি আলোচনায় মিলিত হন।